সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন

আপনি সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। আপনি হয়তো জানেন না যে, সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? সফর বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। ব্যবসায়িক কাজে বা চাকুরীর কাজে তাই ইসলামে সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন।
সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন
সে বিষয়ে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করেছে। আপনি সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? এ বিষয়ে পরিষ্কারভাবে জানতে পারলে উপকৃত হবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন

সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন

সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? এ বিষয় নিয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে বিস্তারিত ভাবে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব। আশা করি তথ্যগুলো জানার পরে আপনার উপকার হবে। আমরা ব্যক্তিগত অনেক প্রয়োজনে বা চাকরি বা ব্যবসার কাজে অথবা বিনোদনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমনে যাই। যখন আমরা ভ্রমন অবস্থায় থাকি, তখন আমরা মুসাফির আর এ মুসাফিররা সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন, হাদীসে সে বিষয়ে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। 

আরো পড়ুনঃ পটল চাষ কিভাবে করতে হয়?

চলুন তাহলে হাদিসে সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? এ বিষয়ে কি বর্ণনা আছে তা জেনে নেই। আমরা বাড়ি থেকে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বে যাওয়ার নিয়তে বাড়ি থেকে বের হলে, আমরা মুসাফির বলে গন্য হই। মূলত আমরা নিজ গ্রাম বা শরের শেষ সীমানা থেকে বেরিয়ে গেলেই, ইসলামের কিছু বিধান আমাদের উপরে অর্পিত হয় (জাওয়াহিরুল ফিক্বহ ১/৪৩৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৫)। এর মধ্যে নামাজ একটি অন্যতম বিষয়। আপনি যদি আকাশ পথে ভ্রমণ করেন। 

সেক্ষেত্রে আকাশ সীমারেখার নির্দিষ্ট দূরত্ব অর্থাৎ ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরত্ব পার হলেই আপনি মুসাফির। আবার যদি আপনি পাহাড়ে যান তাহলে পাহাড়ের উঁচু নিচু হিসাব করে নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করলে, আপনি মুসাফির (ফাতহুল ক্বাদির ২/৩১, আল বাহরুর রায়েক ২/২২৯)। শরীয়তের ভাষায় মুসাফিরের নামাজকে বলে কসর। আর এই কসর শব্দের অর্থ কম বা কমানো। আপনি যখন আপনার নিজস্ব বাসভবন থেকে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরে যাওয়ার এবং সেখানে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করেন। 

তখন আপনার উপরে চার রাকাত ফরজ নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত কসর নামাজের বিধান ফরজ হয়ে যায়। কেউ যদি ইচ্ছাকৃত চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ে তাহলে সেটি পাপ হবে। বান্দাদের কল্যাণের জন্যই আল্লাহ তায়ালা নামাজকে সংক্ষেপে করেছেন। সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? এ প্রশ্নের উত্তরে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায় কোনো আপত্তি নেই (সুরা নিসা, আয়াত: ১০)। 

আরো পড়ুনঃ মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা

সফরের সময় আল্লাহ পাক বান্দাদের উপরে কিছু বিধান আরোপিত করেছেন যেমন- চার রাকাত ফরজ নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত কসরের নামাজ পড়তে হবে। সফরকালীন সময়ে রোজা না করে পরবর্তী সময়ে রোজা করলে চলবে ইত্যাদি বিধান মুসাফিরদের উপরে আরোপিত হয়েছে। তাহলে আপনি পরিষ্কার ভাবে বুঝে গেছেন যে, সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন। আর্টিকেলটি পড়ার পরে সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? এ বিষয়ে আপনার ভিতরে আশা করি আর কোন ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ কাজ করবে না।

সফরে নামাজ আদায়ের নিয়ম

সফরে নামাজ আদায়ের নিয়ম নিয়ে এ আর্টিকেলে আপনার সঙ্গে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। যাতে করে আপনার ভিতরে কোন ধরনের সফরে নামাজ আদায়ের নিয়ম নিয়ে সংশয় বা সংকোচ না থাকে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক আমরা যখন সফরে থাকি তখন সফরে নামাজ আদায়ের নিয়ম কি? আপনি যখন আপনার বাসভবন থেকে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বে সফরের জন্য নিয়ত করবেন এবং আপনার গ্রাম বা শহরের নির্দিষ্ট সীমানা পেরিয়ে যাবেন তখন আপনি মুসাফির হয়ে যাবেন (জাওয়াহিরুল ফিক্বহ ১/৪৩৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৫)। 

আমরা যখন মুসাফির অবস্থায় থাকি তখন আল্লাহ পাকের কিছু বিধান আমাদের উপরে অর্পিত হয়। আমাদের কল্যাণের জন্যই এ সমস্ত বিধান আরোপিত হয়েছে। নামাজের ক্ষেত্রে, মুসাফির অবস্থায় চার রাকাত ফরজ নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত কসরের নামাজের বিধান দিয়েছেন। আবার মুসাফির অবস্থায় রোজা না রেখে সে রোজা গুলো পরবর্তীতে করলেও চলবে। কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে দুই রাকাত কসরের নামাজ না পড়ে, চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ে তাহলে সেটা গুনাহ হবে। তবে স্থানীয় ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করলে, তার মতই চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা যাবে। (আল মাবসুত, সারাখসি : ১/২৪৩, (ইবনে আবি শাইবা : ৩৮৪৯)। 

আরো পড়ুন পেট ব্যাথা কেন হয় - পেটে ব্যথা হলে কী করবেন

একজন মুসাফির আরেকজন মুসাফির ইমামের পিছনে যদি নামাজ পড়ে, তাহলে দুই রাকাত কসর পড়তে হবে। মাগরিব, বেতের ও ফজর নামাজে কসর নেই এগুলো সম্পূর্ণ নামাজ পড়তে হবে। সফরে নামাজ আদায়ের নিয়ম গুলোর মধ্যে সুন্নত নামাজের নিয়ম হচ্ছে- চলন্ত অবস্থায় বা তাড়াহুড়া থাকলে, ফজরের সুন্নত নামাজ ছাড়া, অন্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা না পড়ার সুযোগ আছে তবে গন্তব্যে পৌঁছার পরে সুন্নত নামাজ পড়তে হবে। সুন্নত নামাজে কোন কসর নাই। আশা করি আপনি পরিষ্কার ভাবে সফরে নামাজ আদায়ের নিয়ম ও সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? সে বিষয়গুলো বুজতে পেরেছেন।

কসর নামাজ কতদিন

কসর নামাজ কতদিন এ বিষয় নিয়ে আমি আর্টিকেলটি লিখব। আমরা সবাই কম বেশি ভ্রমণ করে থাকি। তাই আমাদের সবারই জানা দরকার কসর নামাজ কতদিন। কারণ অনেক সময় কসর নামাজ কতদিন না জানার কারণে আমরা সঠিক ভাবে নামাজ আদায় করতে পারি না। কসর নামাজ কতদিন জানতে হলে আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক, কসর নামাজ কতদিন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা। আপনি যখন মুসাফির অবস্থায় ১৫ দিন বা তার বেশি সময় থাকবেন তখন আপনার উপরে কসর নামাজের পরিবর্তে, মূল নামাজের নিয়মে নামাজ পড়তে হবে। 

অর্থাৎ চার রাকাত নামাজের পরিবর্তে মুসাফির অবস্থায়, যে দুই রাকাত নামাজের নির্দেশ আছে, তা তখন থাকবে না। ফরজ নামাজ চার রাকাতই পড়তে হবে। আর যদি আপনার ভ্রমণ ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য হয় তাহলে আপনার কসর নামাজের নিয়ম অনুযায়ী নামাজ পড়তে হবে। অর্থাৎ চার রাকাতের ফরজ নামাজ গুলো, দুই রাকাত পড়তে হবে। এ আলোচনার মাধ্যমে আপনি নিশ্চয়ই বুজতে পেরেছেন, কসর নামাজ কতদিন পর্যন্ত বলবত থাকে।

মাগরিবের কসর নামাজের নিয়ম

মাগরিবের কসর নামাজের নিয়ম নিয়ে আমি আর্টিকেলটি লিখব। আপনি যদি মাগরিবের কসর নামাজের নিয়ম না জানেন। তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আমি এই আর্টিকেলে মাগরিবের কসর নামাজের নিয়ম নিয়ে আলোচনা করব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক, মাগরিবের কসর নামাজের নিয়ম নিয়ে আলোচনা। মুসাফির অবস্থায় চার রাকাত ফরজ নামাজ গুলো দুই রাকাত পড়বেন এটাই কসর নামাজের নিয়ম। তবে জোহর, আসর এবং এশা এই তিন ওয়াক্তের ফরজ নামাজ গুলো দুই রাকাত পড়বেন। আর ফজর ও মাগরিব নামাজে কোন কসর নেই মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামাজ, তিন রাকাতই পড়তে হবে।

উপসংহার

সফরে গেলে যেভাবে নামাজ আদায় করবেন? এবং  সফরে নামাজ আদায়ের নিয়ম গুলো, যেভাবে হাদিসে ও কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, সে অনুযায়ী আমরা মানার চেষ্টা করব। আল্লাহর সকল বিধান আমাদের জন্য কল্যাণকর তাই সফরের সময় আল্লাহ বান্দার উপরে যে বিধান দিয়েছেন সেভাবেই আমরা সফরের সময় মানবো অন্যথায় আমাদের গুনাহ হয়ে যাবে। আপনি যে তথ্যটির জন্য আর্টিকেলটি পড়ছিলেন আশা করি সে তথ্য আপনি পেয়েছেন।

আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে, এবং আপনি সঠিক তথ্য পেয়ে থাকেন, তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ।24079

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url