নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা - শিশুর নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসাabir

 

নিউমোনিয়া হল ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাল বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণের কারণে আপনার ফুসফুসে তরল জমা হওয়া। আজ আমরা নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা ও নিউমোনিয়ার এন্টিবায়োটিক নিয়ে আলোচনা করবো। নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা ও নিউমোনিয়ার ঔষধের নাম সম্পর্কে কি আপনারা জানতে চান। নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা সম্পরকে জানতে নিচে পড়ুন।

নিউমোনিয়া হলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। হলুদ, সবুজ বা রক্তাক্ত শ্লেষ্মা ওঠে আবার জ্বর এবং কাশিও হতে পারে। নিউমোনিয়ার কারণ এবং এটা কতটা তীব্র তার উপর নির্ভর করে চিকিৎসা করা হয়। নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচে পড়তে থাকুন।

সূচিপত্রঃ নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা

ভাইরাল এবং ব্যাকটেরিয়া নিউমোনিয়া মধ্যে পার্থক্য কি?

যদিও সমস্ত নিউমোনিয়া আপনার ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে সমস্যা হয়। তবে নিউমোনিয়ার মূল কারণটি ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক কিনা তার উপর নির্ভর করে এই রোগের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া ভাইরাল নিউমোনিয়ার চেয়ে গুরুতর হয়। এর কারণে এই নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় পেতে হাসপাতালে থাকার সম্ভাবনা বেশি।

আরো পড়ুনঃ ভূমিকম্প হলে করণীয় কি  

ডাক্তাররা নিউমোনিয়ার এন্টিবায়োটিক দিয়ে ব্যাকটেরিয়া নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করে। ভাইরাল নিউমোনিয়া ফ্লু-এর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে এবং এটার নিজে থেকেই ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভাইরাল নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ এর জন্য আপনার সাধারণত সেভাবে চিকিত্সার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যদি ডাক্তার দেখানোর দরকার পড়ে তাহলে দেরি করবেন না।

নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা

নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণত বাড়িতে নিউমোনিয়ার ঔষধের নাম জেনে তা দিয়ে চিকিত্সা করা যেতে পারে। যদিও বেশিরভাগ নিউমোনিয়া রোগ কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যে সহজ হয়ে যায় কিন্তু ক্লান্তির অনুভূতি এক মাস বা তার বেশি সময় ধরে চলতে পারে।

নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ এবং তীব্রতা, আপনার বয়স এবং আপনার স্বাস্থ্যের উপর ভিত্তি করে নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা করা হয়। কোন নিউমোনিয়ার জন্য কি চিকিৎসা করা হয় তা নিচে দেখুনঃ

অ্যান্টিবায়োটিকঃ এই ওষুধগুলি ব্যাকটেরিয়া নিউমোনিয়া চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। আপনার নিউমোনিয়া যদি ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয় তাহলে এটির চিকিৎসার জন্য সেরা নিউমোনিয়ার এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। তারপরেও যদি আপনার নিউমোনিয়া ভালো না হয় তাহলে ডাক্তার ভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ জীবন দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষার বৈশিষ্ট্য

কাশির ওষুধঃ এই ওষুধটি নিউমোনিয়ার সময় আপনার কাশি কম করতে ব্যবহার করা যেতে পারে যাতে আপনি বিশ্রাম নিতে পারেন। যেহেতু কাশি আপনার ফুসফুস থেকে তরল আলগা করতে এবং সরাতে সাহায্য করে, তাই আপনার কাশি সম্পূর্ণরূপে ভালো না করাই ভাল। আপনি যদি একটি কাশির ঔষধ খেতে চান তবে খুব কম খান যা আপনাকে বিশ্রামে সহায়তা করে।   

জ্বর ও ব্যথা উপশমকারীঃ আপনি জ্বর এবং অস্বস্তির জন্য প্রয়োজন হিসাবে এটি নিতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন  এবং অ্যাসিটামিনোফেন এর মতো ওষুধ।

হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে কখন 

নিউমোনিয়ার কারণে আপনাকে যখন হাসপাতালে ভর্তি হতে হতে পারেঃ 

  • আপনার বয়স ৬৫ বছরের বেশি হলে
  • আপনার কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস পেলে
  • আপনার সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মিলিমিটার পারদের নীচে বা আপনার ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মিমি এইচজি বা তার নীচে থাকলে 
  • আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত (30 শ্বাস বা তার বেশি এক মিনিট) হলে বা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে
  • আপনি যদি মনে হয় আপনার অক্সিজেন প্রয়োজন 
  • আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে থাকা
  • আপনার হার্ট রেট ৫০ এর নিচে বা ১০০ এর উপরে থাকলে  

শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হতে পারে যদি নিচের লক্ষণ গুলো থাকেঃ

  • শিশুর বয়স ২ মাসের কম হলে
  • শিশুরা অলস বা অত্যধিক ঘুমন্ত হলে
  • যদি তাদের শ্বাসকষ্ট হয়
  • তাদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় 
  • শিশুদের যদি ডিহাইড্রেটেড দেখা দেয়

শিশুর নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা

শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা শিশু মৃত্যুহার কমানোর একটি অপরিহার্য উপাদান। হিব, নিউমোকোকাস, হাম এবং হুপিং কাশি এর জন্য টিকা দেওয়া নিউমোনিয়া প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। শিশুদের প্রথম ৬ মাস বুকের দুধ খাওয়ানোর ফলে শিশুদের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষার উন্নতি হয়। নিউমোনিয়া প্রতিরোধে মায়ের বুকের দুধ খুব কার্যকরী এছাড়াও এটি একটি শিশু অসুস্থ হলে তা খুব তাড়াতাড়ি ভালো করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ তাৎক্ষনিক ভাবে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায় 

নিউমোনিয়ার এন্টিবায়োটিক দিয়ে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করা উচিত। নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসার জন্য পছন্দের অ্যান্টিবায়োটিক হল অ্যামোক্সিসিলিন ডিসপারসিবল ট্যাবলেট। নিউমোনিয়ার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুখে মুখে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়, যা প্রায়শই একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাওয়া যায়। শুধুমাত্র নিউমোনিয়ার গুরুতর অবস্থার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। এটাই একমাত্র ভাইরাল নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় মনে করা হয়। 

নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা - শেষ কথা

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারি নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে নিউমোনিয়ার ধরন, নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ বা আপনি কতটা অসুস্থ বোধ করছেন, আপনার বয়স এবং আপনার অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর ভিত্তি করে। দুই ধরণের নিউমোনিয়া বেশি দেখা যায় এর মধ্যে ভাইরাল নিউমোনিয়া খুব গুরতর। [জব আইডি=২২৪৯৮] 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url